Friday, 4 November 2016

ভুত না অদ্ভুত ! পর্ব-১

কোনও অলৌকিক ব্যাপার বা ভৌতিক ব্যাপার বিশ্বাস করে না অভ্র। তাই যখন দালালের কাছে এই ফ্ল্যাটের কথা শুনলো এতটুকু চিন্তা না করে ফ্ল্যাট টা নিয়েই নিল। দালালটাকে ভাল বলতে হবে কোনও কিছু গোপন করেনি। বলেছে এই ফ্ল্যাট টা কিনেছিলেন একজন ফরাসী দোভাষী। একদিন সকালে হঠাৎ করেই আবিস্কার করা হল কেউ তাকে খুন করে রেখে গেছে। মনে হয় লোকটার তিনকুলে কেউ ছিলনা তাই কেউ আর খোঁজ করেনি। পরে পুলিশ তাকে কবর দিয়ে দেয়। কিন্তু তার পর থেকেই শুরু হয় এই ফ্ল্যাটে উৎপাত । আজ পর্য্যন্ত কম করে পনেরোটা ফ্যামিলী এক রাত থেকেই পালিয়েছে।
অভ্রর উপায় নেই। বাবার পেটে টিউমারটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেসন করা দরকার। বোন এমএ পড়ছে। ওর বিয়ের কথাও তো ভাবতে হবে!বলছে বিএড করবে। তারও একটা খরচ আছে। এইসব চিন্তার মধ্যে কলসেন্টারের কাজটা পেয়ে গেল। ভাল মাইনের লোভ  সামলাতে পারলোনা। কয়েক মাস মেসে থেকে সুবিধার থেকে অসুবিধাই বেশী হল। তাই খুব সস্তায় এই ফ্ল্যাট টা ভাড়া পেয়ে যেন স্বর্গ পেল হাতে। আসবাব মোটামুটি ছিলই। যেমন একটা বেশ বড় তক্তপোষ একটা আলমারি  একটা টেবিল ও চেয়ার। এগুলির পালিশ ও ডিজাইনে পুরোনো মধ্যযুগীয় ছাপ রয়েছে। এসব ছাড়া ছিল একটা বড় তোরঙ্গ। যেটা ছিল তালা বন্ধ। চাবি জানা নেই কোথায়। অভ্র ভাবলো কি হবে আর কৌতুহল দেখিয়ে। ইভনিং শিপ্ট,অবশ্য সেটা নামেই রোজই প্রায় বাড়ী ফিরতে ভোর চারটে হয়। ঐ জন্য অফিসের সামনের এই বাসস্থান পছন্দ করলো। আজ অফ ছিল বলে আজই শিফ্টিং টা করে নিল। সবকিছু গুছিয়ে বসতে বসতেই রাত নটা হয়ে গেল। কমপ্লেক্সের বাইরে রুটি আর তরকার দোকান থেকে খাবার কিনে নিয়ে এসেছিল। খাওয়া দাওয়া শেষ করে তাড়াতাড়ি শুয়েও পড়লো।
রাত তখন কটা হবে খেয়াল নেই হঠাৎ  ঘুম ভেঙ্গে গেল। পাশ ফিরতে গিয়ে পাশের খোলা জানলায় চোখ পড়লো। একজন অভ্রর দিকেই তাকিয়ে আছে। যত্তসব জ্বালা!আগের বাড়ীটাতেও এইসব ঝামেলা ছিল। জানলা খোলা থাকলেই কেউনা কেউ উঁকি  মেরে দেখতো। ওটা না হয় কলোনি এলাকা ছিল,এখানেও এইসব আছে! বিরক্তিতে মুখ ঘুরিয়ে চোখ বুজলো অভ্র। আর তখনই মনে পড়লো, অভ্র’র ফ্ল্যাট টা ১৫ তলায়। প্রবল অস্বস্তি নিয়ে সারাটা রাত আর ঘুমাতেই পারলোনা অভ্র।

   

No comments:

Post a Comment