অফিসে ঢুকে থেকে এইসব কিছু নিয়েই ভাবছিল অভ্র। দু-দুবার মারাত্মক ভুল হতে গিয়ে বাঁচল মতিনের সাহায্যে। একটু সুযোগ পেয়ে মতিন জিগ্গেস করলো কি হয়েছে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে অভ্র সব ঘটনা বলল। বাড়ী ফেরার পথে গাড়িতে মতিন বলল,“তুই তোরঙ্গটা খোল। না খুললে এসব হতেই থাকবে। কোনও অতৃপ্ত আত্মা তোকে ওটা খুলতে বলছে। নিশ্চই ওর মধ্যে এমন কিছু আছে যেটা তোর জানাটা দরকার”
আজও খাবার তৈরী ছিল। কিন্তু আজ অভ্র নন্দকে পয়সা দিল। নন্দ কিছুতেই নেবেনা। অভ্র বলল, “আমি তো তোমায় খাবারের দাম দিচ্ছিনা! তুমি কাল থেকে আমার জন্য রুটিটা কিনে রেখো”
লিফটের কাছাকাছি আসতেই একটা উত্তেজনা হতে থাকে, আজ আবার নতুন কি ঘটতে চলেছে কে বলতে পারে।অভ্র কি ভয় পাচ্ছে! আর তখনই অভ্র বুঝতে পারলো লিফটের মধ্যে সে একা নেই। তার পাশে কে একজন দাঁড়িয়ে। অভ্র চকিতে ডান পাশে তাকালো। নাহ্ কেউ নেই শুধু ঘাড়ের কাছে একটা কিছুর অস্তিত্বের অনুভুতি। অভ্র খুব গর্বের সাথে নিজেকে সাহসী বলে পরিচয় দিত। আজ কি তাহলে সেই জন্য এই অবস্থায় পড়লো! মনে মনে শুধু প্রমাদ গুনতে লাগলো। লিফটের দরজা খুলতেই যেন এতক্ষণের আটকে থাকা নিশ্বাসটা পড়লো। মনে হল পিছনে কেউ যেন ফ্যাসফ্যাসে গলায় হাসছে। মনের ভুলই হবে হয়তো। তালা খুলে ঘরে ঢুকে আলো জ্বালালো অভ্র। আলো জ্বালতেই তোরঙ্গটার দিকে চোখ পড়লো অভ্রর। তখনই মনে পড়লো নীচে নন্দ বলছিল ওই তোরঙ্গটার চাবি নাকি পুলিশ কোনভাবেই পায়নি। তালাটা ভাঙ্গতে চেষ্টা করেও অসফল হয়ে কেস বন্ধ করে দিয়েছিল। নন্দর বক্তব্য অনুযায়ী ঐ আত্মাটা চাইছে যে অভ্র তোরঙ্গটা খুলুক। অভ্র আর কোনও কিছু না ভেবে চাবিটা দিয়ে তালাটা খুলে ফেলল। ওপরের ডালাটা খুলে বেশ অবাক হল। একটা পুরোনো খাতা আর দুটো ছোট ছোট পুঁটুলি ছাড়া কিছুই নেই। একটা পুঁটুলিতে ছোটবড় সোনা রূপার মোহর আর আরএকটাতে রঙবেরঙের কাচের টুকরোতে ভর্তি। খাতাটা খুলে বুঝলো এটা একটা ডাইরি। কিন্তু ভাষাটা যে কি বোঝা গেলো না, সম্ভবতঃ ইটালী। কাচের টুকরো গুলো আর কিছুই নয় হীরে জহরত। কিন্তু এগুলো এখানে কেন। এগুলো পাইয়ে দেবার জন্য ভুত বা আত্মা যাইহোক এতকিছু করলো কেন!তবে কি এই ডাইরিতে কিছুকি এমন লেখা আছে যেটা জানা দরকার? কিন্তু এতো ইটালী বুঝবে কি করে?এইসব নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই ঘুমিয়ে পরলো অভ্র।
চলবে