গাড়ী ছুটে চলেছে আগ্রার দিকে।মন কিন্তু পড়ে রয়েছে ফতেহপুর সিক্রীতেই।কি আশ্চর্য্য, কি অভাবনীয় যে কত হাজার বছর আগে একজন মানুষ তার জীবনের লড়াইটা এখান থেকে শুরু করে এখানেই শেষ করেছিলেন। আর আমরা এত বছর পরে তার ভগ্নাবশেষ দেখছি। যখন তিনি তৈরী করেছিলেন তখন তিনি ভাবেনও নি যে তার তৈরি এইসব থাকার জায়গা কেউ অবাক বিস্ময়ে দেখবে।
চড়া রোদ্দুরে মাথা ব্যাথাটা আরও বেড়েছিল। মায়ের কাছে একটা ছাতা ছিল কিন্তু সে ছাতাও আমার মাথা ব্যাথার কিছুমাত্র আরাম দিতে পারেনি।রাজা উঠেই বলেছিল ড্রইভারকে একটা খাবার জায়গা দেখে দাঁড়াতে। একটা পাঞ্জাবী ধাবা দেখে গাড়ী দাড়াঁলো। খাবার দাবার খুব ভাল ছিল, মালিকও খুব যত্নবান ছিল। আমি অল্প স্যুপ খেলাম। আবার গিয়ে চড়লাম গাড়ি। আমার শরীরটা চাইছিল ঘুম। জানলায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরলাম।
আগ্রায় ঢুকেছি বোঝা যায় একটা জিনিষেই, অজস্র লালমুখো বাঁদরের উপস্থিতিতে। আগ্রার বিখ্যাত মিঠাই হল 'পেঠা'। এটা আর কিছুই না সিম্পলি 'আনারসের মোরব্বা'। তবে রাজার এক নেশা আছে যেখানে যাবে সেখানকার সব কিছু কিনবে এবং খাবে। তাই পেঠাও তাকে নিতেই হবে। এখানকার পঞ্ছী পেঠা প্রসিদ্ধ। তারই একটা দোকানের সামনে নিয়ে ড্রাইভার দাঁড় করালো। আমরা পেঠা কিনে হোটেলের উদ্দ্শ্যে রওনা দিলাম।
কাল আমরা রওনা দেব দিল্লী কিন্তু আমার মন খারাপ হয়েযাচ্ছিলো। আরও কিছুদিন যদি থাকা যেত ! আরও একটু ভালো করে দেখা যেত! সময়াভাবে এই ঝটিকা সফর, মন ঠিক মানলো না। তবে এইটুকু শান্তনা পেলাম যে, যে সব জায়গা,স্মৃতিসৌধ দেখতে বিদেশীরা ভীড় জমায়, সে সব কিছু নিজের দেশে থাকা সত্ত্বেও দেখিনি, আজ দেখলাম। আজ দেখলাম সেই ইতিহাস মোড়া শহর কে। বিদায় আগ্রা! যুগযুগ ধরে বাঁচিয়ে রেখো তোমার এই ইতিহাসের নায়কদের।
No comments:
Post a Comment