ট্যাক্সিতে যেতে যেতে মাটি ভাবছিলো প্রতিটা ঘটনা। তাহলে কি তমাল সহেলীর ব্রেক আপ হয়ে গেলো! মন থেকে মেনে নেওয়া যাচ্ছিলো না, নিজেকে অপরাধি মনে হচ্ছিলো। তবে এটাও ঠিক সহেলী আজ যেটা করেছে তার কোনও ক্ষমা হয়না। কিন্তু তাই বলে ব্রেক আপটাও মানা যায়না।তবে কি কথা বলবে তমালের সাথে? কিন্তু সেটাও কি ঠিক হবে? একটা সম্পুর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আলোচনা তমাল পছন্দ নাও করতে পারে....
হয়তো বিধাতা চাইছিলেন মাটি কথা বলুক তমালের সাথে। লাইব্রেরিতে মাটির মুখোমুখিই এসে বসলো তমাল। মাটি কিছুক্ষন অপেক্ষা করে একবার "কিপ সাইলেন্ট" বোর্ডটার দিকে তাকালো তারপর ব্যাগ থেকে একটা স্লিপ বার করে লিখলো "একটু কথা ছিলো"। স্লিপ্ টা এগিয়ে দিল তমালের দিকে।একটু পরে মাটির সামনে ও একটা স্লিপ পরলো যাতে লেখা," জানতাম, বাইরে আসুন" তমাল উঠে বেরিয়ে গেছে। মাটিও তমালের পিছু নিলো। লাইব্রেরীর বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল তমাল। মাটিকে দেখেই সামান্য হেসে বলল, "আমি জানতাম আপনি কিছু অন্ততঃ বলবেন।" এরমধ্যেই লাইব্রেরী থেকে দুজন বেরিয়ে গেল এবং ওদের দেখে অর্থপূর্ণ হাসি হাসলো। তমালের চোখ এড়ালোনা,"এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার থেকে চলুন ক্যান্টিনে বসা যাক"। ক্যান্টিন ফাঁকাই ছিলো। সব ক্লাস চলছে। মাটির প্রথম ক্লাসটা ছিলো না। তবু এসেছিল, প্রথমত তমালের সাথে কথা বলার দরকার ছিল আর দ্বিতীয়ত লাইব্রেরীতে কাজ ছিলো। "বলুন কি বলবেন" তমালের কথায় সম্বিত ফিরল।কোনোরকম ভণিতা নাকরে সরাসরি বলল মাটি"কালকের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রেক আপ একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো না?" মনে হলো তমাল এই কথাটা আশা করেনি। আবার আগের খোলসের মধ্যে ঢুকে গেলো তমাল। গম্ভির হয়ে প্রশ্ন করলো, "আপনার কি মনে হচ্ছে লঘু পাপে গুরু দন্ড হয়ে যাচ্ছে?"
"অবশ্যই, আর তাছাড়া আপনি কি ওকে একটুও ভালবাসেন না!"
মাটির প্রশ্নের উত্তরে তমালের চোখ জ্বলে উঠল, "তমালের কাছে কেউ ভালোবাসা পেতে আসেনা। সবাই সুবিধা পেতেই আসে। তবে আপনি যখন বলছেন আমি সহেলীর সাথে ঝামেলা মিটিয়ে নেব। আশা করি আপনার অপরাধ বোধ আর থাকবেনা..." তমাল শব্দ করে চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো।
পরেরদিন থেকে সহেলীকে সবার দেখা যেতে লাগলো তমালের সাথে। তবে তমাল যেন একটু বেশিই কেয়ার নিচ্ছে সহেলীর। সে হোক, আপত্তি নেই। মাটির প্রতি আর সহেলীর কোনও আক্ষেপ থাকবেনা, এই যা বাঁচোয়া।
No comments:
Post a Comment